দু’জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ, স্বেচ্ছায় একই ছাদের তলায় থাকবেন— এটা কোনও অপরাধ নয়। দেশের সর্বোচ্চ আদালত এই বিষয়ে রায় দিয়েছে বহুদিন আগে। তার পরে যেটা রয়ে গিয়েছে তা হল যুগ যুগ ধরে বয়ে বেড়ানো কিছু সংস্কার।
এই সংস্কার পুরোপুরি কাটতে আরও বেশ কয়েক বছর লাগবে। কাজেই সে ব্যাপারে বেশি চিন্তা করে লাভ নেই। বরং লিভ-ইন সম্পর্কে থেকেও মাথা উঁচু করে বাঁচাটাই আসল কথা।যাঁরা লিভ-ইন করবেন বলে ভাবছেন, তাঁদের জন্য রইল কিছু টিপস—
১. একসঙ্গে থাকতে গেলে প্রথমেই প্রয়োজন একটি স্থায়ী বা অস্থায়ী বাসা। দু’জনের যে কোনও একজনের যদি নিজস্ব থাকার জায়গা থাকে তবে তো কথাই নেই। কিন্তু যদি বাড়িভাড়া করতে হয়, তবে প্রথমেই বাড়িওলাকে বলে নেওয়া প্রয়োজন যে এটা লিভ-ইন অ্য়ারেঞ্জমেন্ট, বিয়ে নয়।
২. লিভ-ইন মানে কিন্তু অদূর ভবিষ্য়তে বিয়ে নয়। এটা মাথায় রেখেই কিন্তু একসঙ্গে থাকা উচিত। যদি কোনও একজন এটা ভেবে থাকেন যে এইভাবে দু’জন দু’জনের অভ্য়াসের সঙ্গে মানিয়ে নিলে শেষমেশ বিয়েটা হবে, তবে সেটা একসময়ে গিয়ে সম্পর্কের ভাঙনের কারণ হয়ে উঠতে পারে।
৩. বিদেশে লিভ-ইন পার্টনারের যা যা আইনী বা সামাজিক সুবিধা রয়েছে, তা এদেশে নেই। সেখানে লিভ-ইন পার্টনারকে পরিবারের অঙ্গ বলেই মনে করা হয়। এক্ষেত্রে যদি পরিবারের থেকে তেমন নৈতিক সমর্থন নাও পাওয়া যায়, তা হলেও পরস্পরের পরিবারের প্রতি দায়িত্বশীলতা দেখানোটা কর্তব্য।
৫. লিভ-ইন মানেই উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপনের ছাড়পত্র নয়। এমনটা মাথায় নিয়ে একসঙ্গে থাকতে শুরু করলে সেই সম্পর্ককে আর যাই হোক সুস্থ সম্পর্ক বলা যায় না। যাঁরা নিয়মিত যৌনতার জন্য লিভ-ইন শুরু করার কথা ভাবেন, তাঁরা আদতে প্রেমিক বা প্রেমিকা কি না সেই প্রশ্ন উঠতে বাধ্য।
৪. লিভ-ইনের খরচ দু’জনে ভাগ করে নেওয়াটাই আদর্শ ব্যবস্থা হওয়া উচিত। কিন্তু দু’জনের একজন যদি পড়াশোনা-গবেষণা নিয়ে ব্যস্ত থাকেন তবে অবশ্যই অন্যজন তাঁকে সাপোর্ট করবেন। তা না হলে একসঙ্গে থাকার সব খরচ ভাগাভাগি করাটাই শ্রেয়, যাতে পরে কেউ এই বিষয়ে অপ্রীতিকর কথাবার্তা না বলতে পারে।
৬. কোনও ছেলে বা মেয়ে একা থাকলেই প্রতিবেশীদের কৌতূহল ও অকারণ বিদ্বেষ তুঙ্গে ওঠে। সেখানে লিভ-ইন দম্পতি পাশের বাড়িতে থাকলে তো এই কৌতূহল বাড়বে।
এই ধরনের প্রতিবেশীদের সামনে সব সময় মাথা উঁচু করে স্পষ্ট গলায় কথা বলতে হবে কিন্তু সেই ব্য়বহারটা যেন নম্র হয়। বেশ কিছু প্রতিবেশীর চেষ্টা থাকবে কোনও না কোনও কারণে ঝামেলা লাগিয়ে দেওয়া। সেটা বুদ্ধি করে এড়িয়ে চলতে হবে।
৭. বাড়িতে কাজের লোক রাখতে হলে, এমন কাউকে রাখতে হবে যিনি প্রতিবেশীদের কারও বাড়িতে কাজ করেন না এবং একেবারেই পাড়ার বাইরে থাকেন। পাড়ার কেউ অথবা পাশের বাড়িতে কাজ করেন এমন কাউকে কাজে রাখলে ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে তাঁরা লিভ-ইন দম্পতিদের নিজস্ব খুঁটিনাটি বিষয়গুলি প্রতিবেশীদের কাছে গিয়ে আলোচনা করবেন।